সফল অস্ত্রোপচার শেষে বিশ্বকাপের স্বপ্ন

সফল অস্ত্রোপচার শেষে বিশ্বকাপের স্বপ্ন

ক্রীড়াবিশ্বের যেন এখন একটাই আগ্রহের কেন্দ্র, নেইমার। ব্রাজিলিয়ান এই সুপারস্টারের পায়ের অস্ত্রোপচার সফল হচ্ছে তো? তিনি বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন তো? অবশেষে সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমীদের সব শঙ্কার অবসান হলো। সফল অস্ত্রোপচার হল বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার নেইমারের ডান পায়ে। ব্রাজিল ফুটবল কনফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এ তথ্য। সফল অস্ত্রোপচারের ফলে রাশিয়া বিশ্বকাপে নেইমারের খেলার সম্ভাবনা প্রবল হল।
সফল অস্ত্রোপচার শেষে বিশ্বকাপের স্বপ্নগত ২৬ ফব্রুয়ারি ফরাসি লিগ ওয়ানে মার্সেইয়ের বিরুদ্ধে পিএসজির ম্যাচ চলাকালীন ডান পায়ে চোট পান নেইমার। গোড়ালি মচকানো ছাড়াও স্ক্যান রিপোর্টে পঞ্চম মেটাটারসালে চিড় ধরা পড়ে। ফলে দেশে ফিরে দ্রুত চোটের জায়গায় অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন নেইমার। বিশেষ করে বিশ্বকাপে খেলার উদ্দেশ্যেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

 

শনিবার ব্রাজিলের দলীয় ডাক্তার রদ্রিগো লাসমারের তত্ত্বাবধানে বেলো হরিজেন্তের মাতের দেই হাসপাতালে নেইমারের পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। ডান পা’ই নেইমারের প্রধান অস্ত্র। বিশ্বকাপের ঠিক একশো দিন আগে সেই ‘সোনার পা’-তে চোট পেলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গেই গত বিশ্বকাপের আতঙ্ক ফিরিয়ে স্ট্রেচারে করে বেরিয়ে যেতে হয় কান্নায় ভেঙে পড়া নেইমারকে। এরপরই বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক তৈরি হয় তাকে নিয়ে। সর্বশেষ তার পায়ে সফল অস্ত্রোপচারের খবরে অন্তত সাময়িক স্বস্তি ফিরছে ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে।

 

ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশনের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে প্রাথমিক ভাবে শুধু এটুকুই জানানো হয়েছে যে, নেমার সুস্থ আছেন। তাকে অপারেশন থিয়েটার থেকে বের করেও নেয়া হয়েছে। একই খবর ঘোষণা করা হয়েছে তার ক্লাব পিএসজি-র পক্ষ থেকেও। ব্রাজিলের কয়েকটি সংবাদপত্রের মতে, প্রায় ঘণ্টা দু’য়েক নেইমার-কে অপারেশন থিয়েটারে কাটাতে হয়েছে। ডাক্তারদের টিমকে নেতৃত্ব দিয়েছেন ব্রাজিলের ফুটবল দলের শল্য চিকিৎসক রদ্রিগো লাসমার। শোনা যাচ্ছে, ভেঙে যাওয়া হাড়কে দ্রুত সারিয়ে তুলতে তার পায়ের পাতায় স্ক্রু লাগানো হয়েছে।

 

পিএসজির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ক্লাবের ফিজিওথেরাপিস্ট দেখার পরে রিহ্যাবিলিটেশনের দিনক্ষণ ঠিক করা হবে। ছয় সপ্তাহের মধ্যে নেইমারের পায়ের পাতার অবস্থা নিয়ে রিপোর্ট পেশ করবেন ডাক্তাররা। একমাত্র তখনই ধারণা পাওয়া যেতে পারে যে, তিনি কবে মাঠে ফিরতে পারবেন। অস্ত্রোপচার সফল হওয়ার প্রাথমিক খবর প্রকাশের সময় জানানো হয়েছে, নেইমারকে ‘রিকভারি রুম’-এ নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে তার মা এবং চারজন বন্ধু রয়েছে। ডাক্তারেরা পর্যবেক্ষণে রেখেছেন। তবে অস্ত্রোপচার সফল ভাবেই হয়েছে। যদিও পাপারাজ্জিদের ঠেকাতে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল হাসপাতাল।

 

ব্রাজিল ফুটবল ফেডারেশন নেইমারের অস্ত্রোপচারের বিষয়টি নিজেদের হাতে তুলে নিলেও পিএসজি একেবারে হাত গুটিয়েও বসে নেই। রেকর্ড অর্থে তারা বার্সেলোনা থেকে ব্রাজিল তারকাকে তুলে নিয়েছিল। চ্যাম্পিয়নস লিগে কয়েক দিনের মধ্যেই রিয়াল মাদ্রিদের বিরুদ্ধে ফিরতি ম্যাচ খেলতে নামছে ফ্রান্সের ক্লাবটি। প্রথম লেগে তারা ১-৩ হেরেছিল।

 

রাশিয়া বিশ্বকাপে ব্রাজিলের প্রথম ম্যাচ ১৭ জুন সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে। মাঝে থাকছে সাড়ে তিনমাসের মতো সময়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিজের সেরা ছন্দে আসতে গেলে বিশ্বকাপের অন্তত এক মাস আগে সুস্থ হয়ে উঠতে হবে নেইমারকে। অর্থাৎ, তাকে সম্পূর্ণ সেরে উঠতেই হবে দুই থেকে আড়াই মাসের মধ্যে। প্রাথমিকভাবে আশঙ্কা তৈরি হলেও সফল অস্ত্রোপচারের পরে ব্রাজিলের ডাক্তাররা আশাবাদী, সেটা সম্ভব। ব্রাজিল দলের ডাক্তার রদ্রিগো বলেছেন, ‘নেইমার খুব হতাশ, কিছুটা দুঃখীও। আবার এটাও বুঝতে পারছে যে, ধৈর্য ধরে যত দ্রুত সম্ভব সেরে ওঠা ছাড়া উপায় নেই।’

আপনি আরও পড়তে পারেন

Leave a Comment